একজন অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্লাসে পড়াচ্ছিলেন।
ক্লাস শুরু হতেই হঠাৎ এক ছাত্র শিস দেয়।
অধ্যাপক থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
— “কে শিস দিল?”
কিন্তু কেউ কোনো উত্তর দিল না।
তিনি আবার পাঠ শুরু করলেন।
কিছুক্ষণ পর আবার সেই একই ছাত্র শিস দিল।
অধ্যাপক আবার থামলেন এবং বললেন,
— “কে শিস দিচ্ছে?”
তবুও কেউ কোনো উত্তর দিল না।
তিনি তৃতীয়বার ক্লাস শুরু করলেন।
কিন্তু এবারও আবার সেই একই শিস শোনা গেল।
অধ্যাপক এবার আর কিছু বললেন না, কলম বন্ধ করলেন, বই গুটিয়ে রাখলেন এবং বললেন —
“আজকের ক্লাস এখানেই শেষ। তবে আজ আমি তোমাদের একটা গল্প বলব।”
ক্লাসে নেমে এল নিস্তব্ধতা।
সব ছাত্র মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগল।
অধ্যাপক বলতে শুরু করলেন —
“একদিন রাতে ঘুম আসছিল না। অস্থির হয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়লাম। কোথাও কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য ছিল না।
রাস্তার ধারে দেখি, এক বৃদ্ধা মহিলা ভারী বোঝা হাতে দাঁড়িয়ে।
গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম —
‘মা, কিছু সাহায্য লাগবে কি?’
তিনি হাসলেন, গাড়িতে উঠলেন।
চলতে চলতে তিনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন —
‘ডাক্তার সাহেব, আমার একটা অবৈধ সন্তান আছে। সে আপনার ইউনিভার্সিটিতেই পড়ে। আমি চাই আপনি তাকে সঠিক পথে আনুন, মানুষ করে তুলুন।’
আমি বললাম —
‘অবশ্যই মা। কিন্তু নামটা বলবেন? যাতে আমি তাকে চিনতে পারি।’
তিনি হেসে বললেন —
‘নাম বলার দরকার নেই। আপনি নিজেই তাকে চিনে ফেলবেন। সে খুব দুষ্টু, সবসময় ক্লাসে শিস দেয়।’”
এই কথা শোনামাত্র ক্লাসের সব ছাত্র একসাথে ফিরে তাকাল সেই ছাত্রটির দিকে — যে শিস দিচ্ছিল।
অধ্যাপক তখন হেসে বললেন —
“এসো ছোট ভাই। তুমি কি ভাবছো আমি এই পিএইচডি ডিগ্রি গাধার হাট থেকে কিনে এনেছি?”
ছোট কাজেও বড় বার্তা থাকে:
একজন ছাত্রের ছোট্ট দুষ্টুমিও তার চরিত্রের পরিচয় দিতে পারে।
শ্রদ্ধা ও শৃঙ্খলার গুরুত্ব:
শিক্ষা মানে শুধু পড়া নয়, শ্রদ্ধা, নৈতিকতা এবং আত্মসম্মান শেখা।
অপমান নয়, বুদ্ধি দিয়ে শিক্ষা দিন:
একজন শিক্ষক কিভাবে গল্পের মাধ্যমে কাউকে শেখাতে পারেন — এটাই প্রকৃত শিক্ষা।
নিজের ব্যবহারেই পরিচয়:
কোনো নাম না বলেও একজন মানুষ নিজের আচরণ দিয়েই পরিচিত হয়ে ওঠে।
ক্লাসের শুরুতেই নিয়ম স্পষ্ট করা।
শিক্ষকদের নৈতিক ও আবেগজনিত প্রশিক্ষণ দেওয়া।
ছাত্রদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
গল্প বা বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে শেখানো।
শিক্ষক: ছাত্রদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও ভালোভাবে শেখাতে।
ছাত্র: দায়িত্ব ও আচরণের গুরুত্ব বুঝতে।
অভিভাবক: সন্তানদের চরিত্র গঠনে সহায়ক।
প্রশাসন ও ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ: শান্তিপূর্ণ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ গড়তে।
এই গল্প আপনার কেমন লাগল?
নিচে কমেন্ট করে জানান এবং ghostory.in-কে ফলো করুন আরও এমন শিক্ষণীয়, হৃদয় ছোঁয়া গল্পের জন্য।
আপনার একটি মন্তব্য অন্য কাউকে প্রভাবিত করতে পারে।